মোঃইবাদুর রহমান জাকির,সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটের মাদরাসাগুলো বছরে দু’বার বা একবার মাহফিলের আয়োজন করত। বার্ষিক বা ছালানা জলসা।আর ষান্মাসিক জলসাকে বলা হতো এনামী জলসা। বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলই ছিল প্রধান। এখনো এ রেওয়াজ আছে।তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সভা সমাবেশ গ্রামাঞ্চলে বিস্তৃত হওয়ার ফলে ওয়াজ মাহফিলের বাড়তি আমেজে কিছুটা ভাটা পড়ে গেছে।বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলগুলো অগ্রহায়ণ পৌষ মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বৃষ্টি বাদলা নেই।আবহাওয়া সমাবেশের অনুকূল।ফসল তোলা শেষ। ধান কাটার পর মাঠ জুড়ে শুধু নাড়া খাড়া হয়ে আছে।এ রকম মাঠে তেরপাল টানানো হয়। দু’একদিন আগে থেকেই বাঁশের প্যান্ডেল তৈরি হয়।বিস্তৃত মাঠে মাহফিল,মঞ্চ আছে।চৌকির ওপর বিশিষ্ট মেহমানরা বসে আছেন।চেয়ারে বসেছেন বক্তা।তেরপালের নিচে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসেছেন শ্রোতারা।চাটি শীতল পাটি আছে।আবার নুয়ে পড়া নাড়ার মধ্যেও বসেছেন অসংখ্য লোক।মনোযোগ দিয়ে শুনছেন ওয়াজ।মাহফিলের সপ্তাহ দশ দিন আগে থেকেই শুরু হতো প্রচারণা। হাটবাজারে তরুণ ছাত্ররা টিনের চোঙায় এলান দিতেন। মাহফিলে ওয়াজ করতে কে কে আসতেছেন তাদের নামধাম জানিয়ে মাহফিলে শরিক হওয়ার উচ্চকণ্ঠ আহবান কিশোরদেরও আকর্ষণ করত।কারণ মাহফিল ঘিরে মেলা বসত। দিনরাতব্যাপী ব্যতিক্রমী সমাবেশ। যুবক তরুণরাও উৎসবের আনন্দ গ্রহণ করতেন। রাতে বাড়ির বাইরে ওয়াজ মাহফিল উপলক্ষে বের হওয়ার সুযোগ পেয়ে শিশু-কিশোররা মেলার আনন্দে উৎফুল্ল।সমাবেশে দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার লোক এসে জড়ো হতেন। এলাকার প্রতিটি বাড়ি থেকে সরবরাহ করতো ডাল ভাত।আছরের নামাজ শেষে গণভোজের দৃশ্য ছিল মজার বিষয়। লাইন ধরে বসতেন হাজার হাজার মানুষ। বিছিয়ে দেয়া হতো কলাপাতা। কারো পাতে গোশত মাখা ডাল ভাত। কোনো খেদ নেই।পরম তৃপ্তিতে ভোজন শেষে পাশের খালে হাত ধোয়ার বিরতি হতো।তেমনি আজ ১৭/২/২০২০ ইং রোজ মঙ্গলবার মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার বিছরাবন্দ হাঃমাদ্রাসার বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্টিত হয়।এতে মাওঃআব্দুল মতিন শাহবাগী প্রধান অতিথি হিসাবে বয়ান করেন।চারজন মাদ্রাসার হিফজ সম্পন্নকারী ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।পরে মাদ্রাসার পাশের মাঠে বাদ আছর বিতরণ শুরু হয়,ছলনা ইজলাস মাহফিলের শিরনী ডাল ভাত উপস্থিত কয়েক হাজার মুসাল্লি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শত শত ছাত্র মাদ্রাসার শিক্ষক অংশ গ্রহন করেন। মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সাজ্জাদ আলী বলেন আমরা ঐতিহ্যগত ভাবে ১৯৯৬সাল হতে ডাল ভাতের আয়োজন করে আসছি। আমরা যথেষ্ট পরিমান খাবার তৈরি করি কারণ আমাদের জলসায়,প্রচুর পরিমান মুসল্লির সমাগম ঘঠে,আমরা কয়েক শত সেচ্ছাসেবী নিয়োজিত রেখেছি মাহফিল বাস্তবায়নের লক্ষে।মাদ্রাসার মুহতামিম হাঃবাহার উদ্দিন বলেন আমাদের এলাকার মানুষের আর্থিক সহযোগীতায় দুটি গরু জবাই করে ডালের সাথে মিশ্রিত করে জলসার শিরনীর আয়োজন করেছি। আশা অনুপাতে আমরা জলসায় আগত মুসল্লিদের সন্তোষ্টীর যথা সাধ্যচেষ্টা করেছি।ভিন্ন এলাকা হতে আগত মুসল্লিদের মধ্য হতে একজন মুসল্লি মাওঃআব্দুর নূর সাহেব জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন ঐ মাহফিলে বিশিষ্ট বক্তাদের কে দাওয়াত করা হয়,সর্বোপরি ডাল-ভাত শিরনী খাওয়ার জন্য আছি।